রবীন্দ্রনাথের গোরা উপন্যাস সম্পর্কে যা জানো লিখো। গোরা চরিত্রটি কিভাবে মানবতার জয়গান করেছিল ?

রবীন্দ্রনাথের গোরা উপন্যাস সম্পর্কে যা জানো লিখো। গোরা চরিত্রটি কিভাবে মানবতার জয়গান করেছিল ?
উত্তর : ভূমিকা : বিংশ শতাব্দির গোড়ার দিকে বঙ্জাভঙ্জা আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সে আন্দোলনের লক্ষ ছিল বাঙালি ও ভারতীয় জীবন ধারার সামগ্রিক ভাবে উন্নয়ন করা শুধুমাত্র বিদেশি শাসক শত্তির বিরুদ্ধে নিস্ফলক উত্তেজনা সৃষ্টি নয়
রচনা ও প্রকাশকাল : “গোরা” উপন্যাসটি লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এবং “গোরা” উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ।
গোরা উপন্যাসের সারমর্ম : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে সিপাহি বিদ্রোহের সময় এক আইরিশ যুদ্ধে মারা যান। তার আসন্ন প্রসবা স্ত্রী ব্রাহ্মণ কৃযন্দয়ালের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি এক পুত্র সম্তান প্রসব করেই মারা যান। এই ছেলেটির নাম গোরা।
জাতীয়তাবোধ : বাংলাদেশ তথা ভারতবর্ষের মানসলোকের প্রতীক চরিত্র হল গোরা। জাতীয়তাবোধের বিকাশে বহু উপন্যাসের মধ্যে গোরা উপন্যাসটি বিশিষ্টতার দাবি রাখে।
বৈশিষ্ট্যগুলি হল-_
১। বিরোধ সমন্বয় : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার এই উপন্যাসে সমকালীন যুগজীবনের প্রতিচ্ছবি এঁকেছেন। এক দ্বন্দ্ব ও তা থেকে উত্তীর্ণ এক সামগ্রিক পরিমণ্ডল এখানে চিত্রিত হয়েছে। জাতিভেদ, বর্ণবৈষম্য, অভাব ও দারিদ্রের সমাধানের ইঙ্গিতও রবীন্দ্রনাথ দিয়েছেন।
২। মধ্যবিত্ত মানসিকতা : এই উপন্যাসে শিক্ষিত বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজের মানসিকতা ফুটে উঠেছে। বাঙালির আত্মপ্রতিষ্ঠা, অনুসন্ধানি মনোভাব, কৌতূহল, মানবতা ফুটে উঠেছে।
৩। সংকীর্ণতা : আইরিশ যুবক গোরা হিন্দু পরিবারে লালিত-পালিত হয়ে নিজের বিদেশি সত্তা ভুলে গিয়ে বাঙালি হয়ে যায়। সমাজের অন্দরে বাসা বাঁধা এই সংকীর্ণতা গোরা উপন্যাসে ফুটে উঠেছে।

উপসংহার : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “গোরা” উপন্যাসের মধ্য দিয়ে একদিকে জড়িয়ে পড়েছে অসাম্প্রদায়িকতার বাণী এবং অন্যদিকে জাতীয়তাবাদের মূল প্রকৃতি