হিমবাহ ও জলধারার সম্মিলিত অবক্ষেপণ বা সঞ্চয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ

 হিমবাহ ও জলধারার সম্মিলিত অবক্ষেপণ বা সঞ্চয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ
নিম্নভূমিতে হিমবাহ প্রধানত অবক্ষেপণ করে থাকে। হিমরেখার নীচে হিমবাহ গলে ছােটো ছােটো অসংখ্য অস্থায়ী জলধারার সৃষ্টি হয়। এই সমস্ত জলধারা হিমবাহ সঞ্চত পদার্থকে অনেকদূর পর্যন্ত বয়ে নিয়ে গিয়ে দূরবর্তী স্থানে জমা করে। একে হিমবাহ-জলধারার মিলিত সঞ্চয়কার্য বলে। এর ফলে গড়ে ওঠা উল্লেখযােগ্য ভূমিরূপগুলি হল—

[1] কেম: উপত্যকার নীচের অংশে হিমবাহ গলতে শুরু করলে হিমবাহের মাঝখানের ফাঁকা অংশে নুড়ি, বালি, কাকরের স্তরিত অবক্ষেপ দ্বারা সৃষ্ট উঁচুনীচু ঢিবির সারিকে কিংবা উপত্যকার গায়ে সঞ্জিত ত্রিকোণাকার বদ্বীপের কেম মঞ্চ বা সােপান মতাে ভূমিরূপকে কেম বলে। কেমগুলি পরস্পরযুক্ত হয়ে উপত্যকার দুই পাশে সমতল সােপানের মতাে যে ভূভাগ সৃষ্টি করে, তাকে কেম সােপান বলে। আমেরিকার উচ্চ অক্ষাংশে কেম দেখা যায়।
[2] এসকরি: পর্বতের পাদদেশে হিমবাহগলা জলে বাহিত গােলাকার | নুড়ি, বােল্ডার ও মােটা বালুকারাশি স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়ে যে আঁকাবাঁকা শৈলশিরার মতাে ভূমিরূপ গঠন করে তাকে এসকার বলে। দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতায় এসকার যথাক্রমে 400 কিমি,3 কিমিও 200 মি পর্যন্ত হয়। ফিনল্যান্ড, সুইডেন প্রভৃতি দেশে এসকার দেখা যায়।

[3] (বহিঃবিধৌত সমভূমি: হিমবাহ পর্বত পাদদেশে এসে গলে গেলে হিমসী মা ত… বরফগলা জলবাহিত বালি, কাদা, কাঁকর ও ছােটো ছােটো পাথরখণ্ড প্রভৃতি দ্বারা অপেক্ষাকৃত নীচু স্থান ভরাট হয়ে যে সমভূমি গড়ে ওঠে তাকে বহিঃবিধৌত সমভূমি বলে। স্কটল্যান্ড, আইসল্যান্ডে এই ভূমিরূপ দেখা যায়। প্রান্ত গ্রাবরেখা
 (4) কেটল: বহিঃবিধৌত সমভূমির মধ্যে বিচ্ছিন্ন বরফের চাই কাদার মধ্যে চাপা পড়ে যায়। পরে ওই বরফ গলে গর্ত আকৃতির ভূমিরূপ সৃষ্টি করে। এই । গর্ত আকৃতির ভূমিরূপ হল কেটল। এর মধ্যে বরফগলা জল জমে হ্রদ সৃষ্টি হয়। একে কেটল হদ বলে। কেটল হ্রদের তলদেশে স্তরে স্তরে সঞ্চিত পলিকে ভার্ব বলে।