টীকা লেখাে : চম্পারণ সত্যাগ্রহ।

টীকা লেখাে : চম্পারণ সত্যাগ্রহ।
উত্তর : ভূমিকা : ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় গান্ধিজি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে আসেন। সর্বভারতীয় রাজনীতিতে (আসার আগে তিনি) ১৯১৭-১৯১৮ খ্রিঃ তিনটি আলিক আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি ভারতব্যাপী খ্যাতি অর্জন। করেন। যার মধ্যে ‘চম্পারন সত্যাগ্রহ ছিল অন্যতম। নীলকর সাহেবের অমানবিক অত্যাচারে বিহারের চম্পারণ জেলার নীলচাষিদের অবস্থা চরমে উঠেছিল। নীলকররা ‘তিনকাঠিয়া’ ব্যবস্থার মাধ্যমে স্থানীয় চাষির মােট জমির ৩০/২০ অংশে বলপূর্বক নীলচাষ করত। এমনকী উৎপন্ন নীল নীলকরদের কাছে নির্দিষ্ট দামে বিক্রি করতে বাধ্য ছিল।
চম্পারণ সত্যাগ্রহের পটভূমি : বিহারের চম্পারণে নীলকররা নীলচাষিদের ওপর অমানুষিক অত্যাচার করত। গান্ধিজি এই কারণে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে চম্পারণে যান এবং নীলচাষিদের অত্যাচারের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিতে শুরু করেন। তখন গান্ধিজিকে। চম্পারণ ছেড়ে চলে যেতে বললে গান্ধিজি তা অমান্য করেন। এর ফলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু পরে বিনা শর্তে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। চম্পারণে নীলচাষিরা গান্ধিজির আহ্বানে নির্ভয়ে অহিংস সত্যাগ্রহে যােগ দিয়েছিল।
গুরুত্ব : চম্পারণ সত্যাগ্রহ ভারতের জাতীয় আন্দোলনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা হল—
প্রথমত : এই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গান্ধিজি ভারতের নিরক্ষর কৃষক শ্রেণির
সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তােলেন।
দ্বিতীয়ত : এই আন্দোলনের ফলে গ্রামাঞ্চলে গান্ধিজির নিজস্ব রাজনৈতিক চিন্তাধারার বাস্তব প্রয়ােগ ঘটে।
তৃতীয়ত : এই আন্দোলনে সর্বভারতীয় রাজনৈতিক নেতা হিসাবে গান্ধিজির উত্থানের প্রথম পদক্ষেপ।ডঃ জুডিথ ব্রাউন বলেছেন, চম্পারণ সত্যাগ্রহের মাধ্যমে ভারতীয় কৃষক সমাজের সঙ্গে গান্ধিজি প্রথম যােগাযােগ গড়ে ওঠে এবং তিনি কৃষকদের অবর্ণনীয় দুঃখ-দারিদ্র সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভ করেন।