সাঁওতাল বিদ্রোহের ফলাফল।

সাঁওতাল বিদ্রোহের ফলাফল।
উত্তর : ভূমিকা : সাঁওতালরা হল কঠোর পরিশ্রমী, শান্তিপ্রিয় এক কৃষিজীবী আদিবাসী সম্প্রদায়। বীরভূম, মানভূম, বীকুড়া, মেদিনীপুর, মুরশিদাবাদ প্রভৃতি অঞলে বসবাস করত। ওঁপনিবেশিক অরণ্য আইন তাদের নিস্তরঙ্জা জীবনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। যার ফল সীওতাল বিদ্রোহ (১৮৫৫ খ্রি.)।
ফলাফল : ব্রিটিশ সেনাবাহিনী নির্মম অত্যাচারে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয় ১৮৫৬ খ্রি.। এই বিদ্রোহ বাংলা ও বিহারের ইতিহাসে নব যুগের সূচনা করেছিল।
১. কর হ্রাস : সাঁওতাল বিদ্রোহের ফলে জমির ওপর কর হাস করা হয়। সাঁওতাল পরগনাকে যতদূর সম্ভব ভারতীয় জনস্রোতের অন্যান্য অঞল থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা
২. সাঁওতাল পরগনা সৃষ্টি : সাঁওতাল বিদ্রোহের ফলে ইংরেজ কর্তৃপক্ষ সাঁওতাল পরগণা নামে আলাদা এলাকা তৈরি করে দেয়। সাঁওতালদের এলাকাটিতে কোনো ব্রিটিশ সরকারের আইন কাজ করত না।
৩. ভূমি ব্যবস্থা : সরকার সাঁওতাল অধ্যুষিত অঞলের ভূমি ব্যবস্থার যাবতীয় সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেয় তবে সেখানে ভূমিরাজস্ব আদৌ কমানো হয়নি।
৪. ইংরেজদের প্রবেশাধিকার : তিন বছরের জন্য ওই পরগনায় মহাজনদের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়। কিন্তু সেখানে ইউরোপীয় মিশনারিদের অবাধ প্রবেশের ব্যবস্থা করে সাঁওতালদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রচলন এবং খ্রিস্টধর্ম প্রচারের নীতি গৃহীত হয়।
উপসংহার : সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল ছিল অপরিসীম। কারণ শোষণ, নিপীড়ন, অত্যাচার, অনাচারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা এই বিদ্রোহ প্রথম প্রমাণ করে যে, শাসক ও শোষক শ্রেণি যতই ক্ষমতাবান হোক না কেন মনের অদম্য আকাঙ্খা ও প্রবল ইচ্ছা শত্তির দ্বারা তার বিরুদ্ধে রুখে দীড়ানো যায়।