হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা ও হুতােম প্যাচার নকশা’ সম্বন্ধে আলােচনা করাে।

হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা ও হুতােম প্যাচার নকশা’ সম্বন্ধে আলােচনা করাে।
উত্তর : ভূমিকা : হিন্দু প্যাট্রিয়ট সংবাদপত্র একটি গণমাধ্যম, উনিশ শতকে বাংলাদেশে প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয়। হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা ছিল একট সমসাময়িক পত্রিকা। এই সময় বেসরকারি উদ্যোগে অনেকগুলি বিদ্যালয় গড়ে ওঠে।

পত্রিকা প্রকাশনা : ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে ৬ জানুয়ারি হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রাজা রাধাকান্ত দেব।

সামাজিক প্রতিফলন : এই পত্রিকায় বাংলাদেশে সমাজ জীবনের ঘটনা উল্লিখিত হয়েছে। উদীয়মান মধ্যবিত্ত শ্রেণির চরিত্র তাদের আশা আকাঙ্ক্ষা এই পত্রিকায় ফুটে উঠেছে। পত্রিকাটি ইংরেজিতে প্রকাশিত হত। পত্রিকাটি ব্রিটিশ ইন্ডিয়া অ্যাসােসিয়েশনের মুখপাত্র ছিল।

অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিফলন : চিরস্থায়ী ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা, রাজস্বের চড়া হার, জমিদারি শােষণ ও অত্যাচার এই পত্রিকায় প্রকাশিত হত। আর রাজনৈতিক প্রতিফলন হল এই পত্রিকা প্রকাশের কিছুদিন পরেই সাঁওতাল বিদ্রোহ ঘটে। এর অল্পকালের মধ্যেই সিপাহি বিদ্রোহ ঘটে। এই খবরগুলি পত্রিকায় প্রকাশিত হত। আর উনিশ শতকের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের এক অমূল্য গ্রন্থ হল ‘হতুম পাচার নকশা’-এর রচয়িতা ছিলেন কালীপ্রসন্ন সিংহ। তিনি ছদ্মনামে এই গ্রন্থ রচনা করেন।

গ্রন্থটির বিষয়বস্তু : গ্রন্থটি ১৮৬২ খ্রি. প্রকাশিত হয় তার প্রথম ভাগ এবং সম্পূর্ণ প্রকাশিত হয় ১৮৬৪ খ্রি.। এই গ্রন্থটিতে কলকাতার বিভিন্ন উৎসব, পালাপার্বণ ও বারােয়ারি পূজার বর্ণনা আছে। কলকাতার নাগরিক জীবনের নানান উজ্জ্বলতা চিত্র এইখানে লিপিবদ্ধ হয়েছে।

রচনাকার : ‘হুতােম পঁাচার নকশা’ গ্রন্থটি রচনা করেন সাহিত্য প্রতিভা ও সামাজিক চেতনা অধিকারী কালীপ্রসন্ন সিংহ। গ্রন্থটিতে ব্যঙ্গের পাশাপাশি রঙ্গরসেরও আধিক্য ছিল।

গ্রন্থটির রচনাকার নিয়ে বিতর্ক : গ্রন্থটির রচনাকার নিয়ে বিতর্ক ছিল। কালীপ্রসন্ন সিংহের ছদ্মনাম হুতােম প্যাচা ছিল বলে বেশিরভাগ পণ্ডিত মনে করেন আবার ভূদেব মুখােপাধ্যায়েরও ছদ্মনাম হুতােম ছিল বলে অনেকে মনে করেন। সম্পূর্ণ চলিত ভাষায় লেখা গ্রন্থটি।