হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল | হিন্দুমেলার টীকা | মাধ্যমিক ইতিহাস নোট

 চতুর্থ অধ্যায় 

সংঘবদ্ধতার গােড়ার কথা বিশ্লেষণ ও বৈশিষ্ট্য

[su_posts template=”templates/list-loop.php” posts_per_page=”3″ tax_term=”559″ order=”desc”]

বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর: প্রশ্নমান ৪

হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল? | টীকা লেখাে : হিন্দুমেলা

উত্তর: ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তির দিন নবগােপাল মিত্র, রাজনারায়ণ বসু প্রমুখের উদ্যোগে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় চৈত্র মেলা’, যা পরবর্তীকালে ‘হিন্দুমেলা নামে পরিচিত হয়ে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশে এক উল্লেখযােগ্য ভূমিকা পালন করে।

 হিন্দুশলার উদ্দশ্য 

ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার হিন্দুমেলার তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বলে উল্লেখ করেছেন। যথা—জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটানাে, দেশাত্মবােধের জাগরণ এবং হিন্দুদের মধ্যে এক আত্মনির্ভরশীল মনােভাব গঠন করা। হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে এর প্রথম সম্পাদক স্বয়ং গণেন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন—“আমাদের এই মিলন সাধারণ ধর্মকর্মের জন্য নহে, কোনাে বিষয় সুখের জন্য নহে, কোনাে আমােদ-প্রমােদের জন্যও নহে, ইহা স্বদেশের জন্য, ইহা ভারতভূমির জন্য।”

হিন্দুমেলার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল সাধারণ মানুষ বিশেষকরে শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে হিন্দুধর্মের অতীত গৌরবগাথা ছড়িয়ে দেওয়া, দেশীয় ভাষাচর্চা করা, জাতীয় প্রতীকগুলিকে মর্যাদা দেওয়া, প্রাচীন হিন্দুধর্মের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার আদর্শে সবাইকে অনুপ্রাণিত করা, গােপনে হিন্দু যুবকদের মধ্যে বৈপ্লবিক ভাবধারা জাগিয়ে তােলা, হিন্দু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং আত্মনির্ভরশীল ভারতবর্ষ প্রতিষ্ঠা করা।

হিন্দুমেলা শরীরচর্চা, অশ্বচালনা প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা-সাহিত্য-শিল্প-সংগীত-স্বাস্থ্য প্রভৃতির উন্নতি ঘটিয়ে আত্মনির্ভরতা ও ঐক্যবদ্ধতার মাধ্যমে যুবসমাজকে ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা অর্জনের উপযােগী করে গড়ে তুলতে চেয়েছিল। তবে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে প্রত্যক্ষভাবে প্রবেশ না করে হিন্দুমেলা’ দেশাত্মবোেধ প্রচারকেই অধিক প্রাধান্য দিয়েছিল।

সর্বোপরি, দেশীয় জিনিসের প্রদর্শনী, দেশাত্মবােধক সঙ্গীত, বক্তৃতার আয়ােজন প্রভৃতিতেও হিন্দুমেলার সদস্যরা অগ্রণী ছিলেন। হিন্দুমেলার অধিবেশনে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ও গীত ‘মিলে সবে ভারত সন্তান’ গানটি বিপুল উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছিল। হিন্দুমেলা দেশীয় বিদ্যাশিক্ষার উন্নতি ও প্রসারে নিয়ােজিত স্বদেশীদের সম্মান জানানাে এবং তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলিকে জনসমক্ষে প্রচারের জন্য ন্যাশনাল পেপার’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করে।

মন্তব্য: নামমাহাত্ম্যে অনেকে এই প্রতিষ্ঠানকে সাম্প্রদায়িক’ আখ্যা দিলেও বাস্তবে তা যথার্থ নয়। বস্তুতপক্ষে, সেদিন ভারতবাসীর জাতীয়চেতনা ছিল অস্পষ্ট, তখন হিন্দু ও ‘জাতীয়’ শব্দ দুটি ছিল সমার্থক। হিন্দু শব্দের সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প তখনও যুক্ত হয়নি। তাই হিন্দুমেলাকে জাতীয়তাবােধের উদ্বোধনের অন্যতম সহায়ক উপাদানরূপে বিচার করাই ইতিহাস সম্মত।


[su_posts template=”templates/list-loop.php” posts_per_page=”10″ tax_term=”555″ order=”desc”]

Madhyamik History Notes

[su_posts template=”templates/list-loop.php” posts_per_page=”10″ tax_term=”1090″ order=”desc”]

Madhyamik Suggestion

[su_posts template=”templates/list-loop.php” tax_term=”559″ order=”desc”]

Madhyamik Result & Routine

[su_posts template=”templates/list-loop.php” posts_per_page=”5″ tax_term=”1091″ order=”desc”]