কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের মৃত্যুঞ্জয় চরিত্রটি আলােচনা | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা

কে বাঁচায় কে বাঁচে (MCQ)
কে বাঁচায় কে বাঁচে (SAQ)
কে বাঁচায় কে বাঁচে Descriptive Question and Answer
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ONLINE

প্রশ্ন ৭। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা কে বাঁচায়, কে বাঁচে। গল্পের মৃত্যুঞ্জয় চরিত্রটি আলােচনা করাে।

উ: নায়ক চরিত্র: প্রখ্যাত গল্পকার মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে। গল্পের নায়ক চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়। গল্পটি চরিত্রনির্ভর এক বিশেষ ভাবের কাহিনি। ঘটনা নিতান্ত সাধারণ, একেবারে ছােট্ট। কলকাতা শহরের ফুটপাথে দুর্ভিক্ষপীড়িত বুভুক্ষু মানুষের অনাহারে মৃত্যু। মৃত্যুর প্রত্যক্ষ দর্শনের প্রতিক্রিয়ায় মৃত্যুঞ্জয় মানসিক ও শারীরিক উভয় দিক থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারই প্রভাবে মৃত্যুঞ্জয় চরিত্রের ও তার ভাবাদর্শের পরিবর্তন ও ট্র্যাজিক পরিণতির কাহিনিই গল্পের প্রতিপাদ্য বিষয়। তার চরিত্র ও তার অনুসৃত আদর্শের স্বাতন্ত্র তাকে নায়ক চরিত্রের ব্যক্তিত্বে ভূষিত করেছে।

মানবতাবােধে উজীবন ও সর্বহারা স্তৱ অবনমন: মৃত্যুঞ্জয় উচ্চবিত্ত শ্রেণির মানুষ। অফিসে মােটা মাইনের চাকুরে। মৃত্যুঞ্জয় শিক্ষিত সমাজের সেই শ্রেণির মানুষ, যারা খবরের কাগজের খবর পড়ে কিংবা লােকমুখে শুনে অভিজ্ঞতা অর্জন করে। বাস্তবের সঙ্গে যােগ নেই। প্রত্যক্ষ বাস্তব অভিজ্ঞতাও নেই। আকালের ফলে গ্রামের নিরন্ন ক্ষুধার্ত মানুষ শহরের ফুটপাথে ভিড় জমিয়ে অনাহারে মরছে। এ খবর তার কানে এসেছে, কিন্তু সরাসরি দেখার অভিজ্ঞতা নেই। কারণ ফুটপাথে সে হাঁটাহাঁটি করে না। প্রথম প্রত্যক্ষ মৃত্যুদর্শন তার মনকে এমনই আহত করে যে, সে মন ও শরীর দুই দিক থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মৃত্যুদর্শনের প্রতিক্রিয়া তার মধ্যে তাৎক্ষণিক না হয়ে মহত্তম মানবিকতাবােধে উজ্জীবিত করে তাকে উচ্চবিত্তের বিলাসী, সুবিধাবাদী, স্বার্থপর স্তর থেকে নামিয়ে আনে নিরন্ন সর্বহারা ভুখা মানুষের স্তরে।

বিবিধ চারিত্রিক গুণের সমন্বয়: মৃত্যুঞ্জয় ‘নিরীহ শান্ত দরদি ভালাে মানুষ। সে সৎ ও সরল। সে ‘দুর্বলচিত্ত, ভাবপ্রবণ ও আদর্শবাদী’ নয়। মানসিক ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়ায় শ্লথ, নিস্তেজ নয়। তার মধ্যে আছে শক্তির উৎস। এইসব গুণের সমন্বয়ে মৃত্যুঞ্জয়ের মানবিকতাবােধ বড়াে জাতের। তা ছাড়া সে আত্মসর্বস্ব নয়, স্বার্থপরও নয়। আর এই কারণে সে উচ্চবিত্ত শ্রেণির হয়েও স্বতন্ত্র চরিত্রের।

মানবিক গুণ ও উদার মনােভাব: মহত্তম মানবিক গুণের অধিকারী ও উদার মনােভাবের মানুষ বলেই মৃত্যুঞ্জয় মাইনের সব টাকা রিলিফ ফান্ডে তুলে দেয়। অর্ধাহারে থেকে তার স্ত্রী ও সে বাকি খাবার ক্ষুধার্ত মানুষদের বিলিয়ে দেয়। অনুতাপে ও অনুশােচনায় দগ্ধ মৃত্যয় অকপটে। নিখিলকে বলে, ‘আমি বেঁচে থাকতে যে লােকটা না খেয়ে মরে গেল, এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কী ? জেনেশুনেও এতকাল চারবেলা খেয়েছি পেট ভরে। যথেষ্ট রিলিফওয়ার্ক হচ্ছে না লােকের অভাবে, আর এদিকে ভেবে পাই না কী করে সময় কাটাব। ধিক! শত ধিক আমাকে। এই কারণে নিখিল লক্ষ করে জ্বর হলে মুখখানার চেহারা যেমন হয়, মৃত্যুঞ্জয়ের মুখ তেমনি থমথমে। ভেতরে সে পুড়ছে সন্দেহ নেই।

উচ্চবিত্ত স্তর থেকে সর্বহাৱাদেৱ স্তৱে নেমে আসা:  মত্যঞ্জয়ের দরদ, সহানুভূতি, সহমর্মিতা, সর্বস্ব দিয়ে নিরন্নের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার ভাবনা মেকি ও লোেকদেখানাে প্রচারসর্বস্ব নয়, আন্তরিক ও অকৃত্রিম। উচ্চবিত্তের বৈভব, শ্রেণিমর্যাদা, আভিজাত্য, আত্মসম্মান সবকিছু নির্দ্বিধায় ফেলে নেমে এসেছে সর্বহারা ভুখা মানুষের মাঝে। একসময় সর্বস্ব দিয়েও ক্ষুধিত মানুষের জন্য কিছু করতে পারবে না, এই হতাশায় ও অসহায়তায় মুষড়েপড়েছে, কিন্তু নিজের আদর্শের পথ থেকে সরে যায়নি। ফুটপাথের নিরন্ন মানুষের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার সুতীব্র বাসনায় তাদের সঙ্গে দিনরাত তাদের মতন দুঃসহ জীবন কাটিয়েছে। তাদের ভাষা, তাদের যন্ত্রণার প্রকাশ অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করেছে। পরিশেষে তার গায়ের সিল্কের পাঞ্জাবি অদৃশ্য হয়েছে। পরনে উঠেছে ঘেঁড়া ন্যাকড়ার টুকরাে। ধুলােয় ঢাকা শরীর। হাতে ছােট্ট একটি মগ। দশজনের মতাে ফুটপাথে মারামারি, কাড়াকাড়ি করে লঙ্গরখানার খিচুড়ি খায়। আর মুখে একই আর্জি, ‘খেতে পাই নে বাবা। আমায় খেতে দাও ।


 ১। ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে!’ গল্পের উৎস নির্ণয় করো এবং গল্পটির সারাংশ লেখো। [1+4]  ‘Ans./উত্তর click here 

২। গল্পকার মানিক বন্দ্যেপাধ্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে!’ গল্প আলোচনা প্রসঙ্গে নামকরণ কতখানি যথাযথ ও সার্থক হয়েছে আলোচনা করো।  ‘Ans./উত্তর click here 

৩। ‘নইলে দর্শনের অনেক আগেই ঘটে যেত সন্দেহ নেই।’ –কার, কী দর্শনের কথা বলা হয়েছে? অনেক আগেই দর্শন ঘটে যাওয়া সম্ভব হয়নি কেন?  ‘Ans./উত্তর click here 

৪। তখন সে রীতিমতাে কাবু হয়ে পড়েছে।—“তখন’ বলতে কখন? রীতিমতাে কাবু হয়ে পড়ার কারণ কী? সে যে রীতিমতাে কাবু হয়েছে তার কী লক্ষণ দেখা গেল? [১+২+২]  Ans./উত্তর click here 

৫। কী ঘটনার ফলে মৃত্যুঞ্জয় শুন্যদৃষ্টিতে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে রইল-আলােচনা করাে। ওই প্রসঙ্গে ‘শূন্যদৃষ্টিতে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকার তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও। [৩+২]  ‘Ans./উত্তর click here 

৬। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা কে বাঁচায়, কে বাঁচে!’ গল্পেৱ নিখিল চরিত্রটি আলােচনা করাে। [৫] ‘Ans./উত্তর click here

৭। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা কে বাঁচায়, কে বাঁচে। গল্পের মৃত্যুঞ্জয় চরিত্রটি আলােচনা করাে। [৫] ‘Ans./উত্তর click here