ভারতছাড়াে আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা। বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর : প্রশ্নমান-৪

Madhyamik History Notes

বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর : প্রশ্নমান-৪

৩। ভারতছাড়াে আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা।

উ: ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে ভারত ছাড়াে আন্দোলন শুরু হলে সমাজের অন্যান্য শ্রেণির মতাে নারী সমাজও অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের স্বকীয়তা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিল। মভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে নারী সমাজের এই অংশগ্রহণ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ৭ আগস্ট, ভারতছাড়াে প্রস্তাব, গৃহীত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় স্তরের প্রায় সমস্ত নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলেও এই আন্দোলন সচল ছিল। সুচেতা কৃপালিনী, নন্দিতা কৃপালিনী, অরুণা আসফ আলি নারীদের সংগঠিত করে এই আন্দোলনকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছিলেন। ভারতছাড়াে আন্দোলনে বাংলার নারীদের ভূমিকাও গৌরবজনক ছিল।

মেদিনীপুরে ‘তাম্রলিপ্ত’ জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই সরকারের সঙ্গে যুক্ত নারীরা ভগিনী সেনা গঠন করেছিলেন। কৃষক পরিবারের বৃদ্ধা মাতঙ্গিনী হাজরা পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করে ‘গান্ধি বুড়ি’ নামে অভিহিত হয়েছিলেন। এছাড়া লাবণ্যপ্রভা দত্ত; এলা দত্ত, সুনিতা সেন, মায়া ঘােষ প্রমুখের অংশগ্রহণ ভারতছাড়ড়া আন্দোলনকে সুগঠিত করেছিল। চর আসাম ও পাঞ্জাবের ক্ষেত্রে কিশােরী কনকলতা বড়ুয়া ভােগেশ্বরী ফুকোননী, উষা মেহতা প্রমুখ আন্দোলনকে সক্রিয় করে রেখেছিলেন। উষা মেহতা বেতার মাধ্যমে এই আন্দোলনকে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

উর্মিলা দেবী ‘নারী সত্যাগ্রহ সমিতি’ প্রতিষ্ঠা করে বিদেশি দ্রব্য বর্জন, পিকেটিং, স্বদেশী প্রচার, চরকা প্রচলন ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছিলেন। এছাড়া সন্তোষ কুমারী দেবী তৎকালীন চটকল ধর্মঘট শ্রমিক আন্দোলন চা-বাগানে ধর্মঘটে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ভারতছাড়াে আন্দোলনে সমাজের নিম্ন শ্রেণির মহিলারা অংশ গ্রহণ করেছিলেন। মাতঙ্গিনী দেবী তার উজ্জ্বল উদাহরণ। এইভাবে সমাজের অন্যান্য শ্রেণির মতাে নারীসমাজ ভারতছাড়াে আন্দোলনের মতাে গণআন্দোলনে তাদের স্বকীয়তা বজায় রেখে আন্দোলনকে সমৃদ্ধ করেছিলেন এবং যার ফলে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছিল।


[su_posts template=”templates/list-loop.php” posts_per_page=”10″ tax_term=”1090″ order=”desc”]