বিস্মৃতি বা বিস্মরণ কী? কয়েকজন মনােবিদ প্রদত্ত বিস্মরণের সংজ্ঞা দাও। বিস্মরণের কারণগুলি আলােচনা করাে। (1+2+5)

বিস্মৃতি বা বিস্মরণ কী? কয়েকজন মনােবিদ প্রদত্ত বিস্মরণের সংজ্ঞা দাও। বিস্মরণের কারণগুলি আলােচনা করাে। (1+2+5)

উত্তর:- বিস্মৃতি বা বিস্মরণ

স্মৃতির অভাবকেই বিস্মৃতি বা বিস্মরণ বলা হয়। বিস্মৃতি বা ভুলে যাওয়া হল মনে রাখার বিপরীত। স্মৃতি হল শিখন, সংরক্ষণ, মনে করা এবং চেনা এই কয়েকটি মানসিক প্রক্রিয়ার সম্মিলিত রূপ। এই জটিল ক্রিয়া কোনাে কারণে ব্যাহত হলে। বিস্মৃতি দেখা দেয়।

কয়েকজন মনােবিদ প্রদত্ত বিস্মরণের সংজ্ঞা

বিস্মৃতি বা বিস্মরণ কী

বিস্মরণের কারণ

1.) চর্চার অভাব: অনভ্যাসে বিদ্যাহ্রাস—কথাটি এক্ষেত্রে প্রযােজ্য। কোনাে কিছু শেখার পর দীর্ঘদিন চর্চা না করলে তার বিস্মরণ ঘটে।

2.) বিষয়বস্তুর প্রকৃতি: বিষয়বস্তুর প্রকৃতির ওপর মনে রাখা বা ভুলে যাওয়া অনেকখানি নির্ভর করে। এবিংহাউসের পরীক্ষা থেকে জানা যায়, অর্থহীন শব্দতালিকা, অর্থযুক্ত শব্দতালিকা, সম্পূর্ণ বাক্য ইত্যাদি বিষয়বস্তুর মধ্যে অর্থহীন শব্দতালিকার ক্ষেত্রে বিস্মরণের হার সবচেয়ে বেশি।

3.) শিখনের মাত্রা: প্রত্যেক বিষয় শেখার একটা মাত্রা আছে। যেখানে পৌঁছেলে শিখন সম্পূর্ণ হয়। কিন্তু বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে শেখার পরেও যদি চর্চা করা হয় তাহলে তাকে অতিশিখন বলা হয়। অতিশিখনের ক্ষেত্রে বিস্মরণ কম ঘটে।

4.) অবদমন: ফ্রয়েড বলেন, অবদমন হল বিস্মরণের মূল কারণ। যা আমরা চাইনা, যা অসামাজিক বা আমাদের কাছে অপ্রিয় তাকে আমরা অবদমন অর্থাৎ, ভুলে যেতে চাই।

5.) পশ্চাৎমুখী প্রতিরােধ: কোনাে বিষয় ভালােভাবে শেখার আগে যদি অন্য কোনাে সদৃশ বিষয়বস্তু শিখতে যাই, তবে দ্বিতীয় বিষয়টি প্রথমে শেখা বিষয়টির কিছু অংশ ভুলিয়ে দেয়। এই মানসিক প্রক্রিয়াকে বলা হয় পশ্চাৎমুখী প্রতিরােধ। পশ্চাত্মখী প্রতিরােধ বিস্মরণের অন্যতম কারণ।

6.) নেশাকারক বস্তু: দীর্ঘদিন ধরে নেশার বস্তু ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কের স্মরণচিহ্ন অস্পষ্ট হয়ে যায় এবং বিস্মৃতি ঘটে।

7.) আবেগজনিত প্রতিরােধ: তীব্র আবেগমূলক পরিস্থিতিতে খুব ভালাে করে শেখা বিষয়গুলিকেও মনে করতে কষ্ট হয়। ভয়, রাগ, দুঃখ, লজ্জা ইত্যাদি প্রক্ষোভ তীব্রমাত্রায় দেখা দিলে বিস্মরণের মাত্রা বেড়ে যায়।

8.) পরিবর্তিত পরিবেশ: যে পরিবেশে আমরা শিখে থাকি, সেই পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানগুলি স্মরণের সহায়ক। বাড়িতে ভালাে করে তৈরি প্রশ্নোত্তর পরীক্ষার হলে আমরা অনেকসময় ভুলে যাই।

9.) আঘাতজনিত বিস্মরণ: আমরা জানি, সংরক্ষণ নির্ভর করে মস্তিষ্কের ওপর। মস্তিষ্কে কোনাে কারণে গুরুতর আঘাত লাগলে সাময়িকভাবে স্মৃতি নষ্ট হয়।

10.) তীব্র শােক: তীব্র শােকের ফলে ব্যক্তির স্মৃতি সম্পূর্ণ লােপ পায়। এই স্মৃতিলােপকে বলা হয় অ্যামনেশিয়া। যেসব অবস্থা ধারণ বা সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে, সেগুলির বিপরীত অবস্থা বিস্মৃতি আনে। তাই সংরক্ষণ, শিখন এবং অভ্যাস বাড়ালে বিস্মৃতি কমে।


[su_posts template=”templates/teaser-loop.php” posts_per_page=”5″ tax_term=”559″ order=”desc”]

[su_posts template=”templates/teaser-loop.php” posts_per_page=”5″ order=”desc”]