তাই প্রজারা বিদ্রোহী হয়ে উঠল। প্রজারা বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল কেন?

  আমার বাংলা সুভাষ মুখােপাধ্যায়  

 গারাে পাহাড়ের নীচে  

‘তাই প্রজারা বিদ্রোহী হয়ে উঠল। প্রজারা বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল কেন? কে তাদের বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন? ৪+১

  উ: সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের ‘আমার বাংলা’ গ্রন্থের অন্তর্গত গারাে পাহাড়ের নীচে’ রচনাংশে সামন্ততান্ত্রিক জমিদারি শােষণের কে নির্মম চিত্র ফুটে উঠেছে। গারাে পাহাড়ের নীচে সুসং পরগণার হাজংরা চাষাবাদে বেশ পটু ছিল। কিন্তু তাদের উৎপাদিত ফসলের বেশিরভাগ অংশ : জমিদারের পাইক বরকন্দাজরা নানা অছিলায় নিয়ে চলে যেত।

প্রজারা হয়ে পড়ত নিঃস্ব। এর উপর ছিল নির্মম হাতিবেগার আইন। হাতি শিকারের শখ মেটাতে জমিদার পাহাড়ে মাচা বেঁধে সৈন্যসামন্ত নিয়ে বেশ খােশ মেজাজে থাকতেন। আর গ্রামের অসহায় সাধারণ প্রজারা খাওয়ার চাল-চিড়ে বেঁধে সেখানে আসতে বাধ্য হত শুধুমাত্র জমিদারের শখ পূরণ করার জন্য। জমিদার মাচায় বেশ নিরাপদে থাকত, আর যে জঙ্গলে হাতি আছে সেখানে।

প্রজারা বেড় দিয়ে দাঁড়াত। ছেলে বুড়াে কাউকেই রেহাই দেওয়া হত না। এভাবে গভীর জঙ্গলে জীবন বিপন্ন করে ঠায় দাঁড়িয়ে ।
থাকার ফলে হয় সাপের কামড়ে কিংবা বাঘের আক্রমণে বহু মানুষ মারা যেত। জমিদারের হাতি শিকারের শখ মেটাতে নিরীহ অসহায় প্রজারা অকালে প্রাণ দিত। এই নিষ্ঠুর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে প্রজারা একসময় বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।

চাকলায় চাকলায় মিটিং শুরু হয়, কামারশালায় তৈরি হয় মারাত্মক সব অস্ত্র। শেষ পর্যন্ত জমিদারের বাহিনীর কাছে প্রজারা পরাজিত হলেও হাতি বেগার আইন বন্ধ হয়ে যায়। হাতি বেগার আইনের বিরুদ্ধে প্রজাদের বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন গােরাচাঁদ মাষ্টার।


[su_posts posts_per_page=”8″ tax_term=”315″ order=”desc”]