‘চোখের জলটা তাদের জন্য এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে?

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর (কমবেশি ১৫০টি শব্দে) : মান-5

‘চোখের জলটা তাদের জন্য এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে? এমন উপলব্ধির কারণ কী? ১+8

উ: স্বাধীনতা সংগ্রামী, দেশপ্রেমিক, নিরস্ত্র ভারতীয়দের ওপর ব্রিটিশদের অমানুষিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী গল্প হল কর্তার সিং দুগগালের ‘অলৌকিক’ গল্পটি। যারা জীবনকে তুচ্ছ করে কোনাে কিছুর পরােয়া না করে খিদে তেষ্টায় কাতর দেশবাসীকে রুটি-জল পৌঁছে তাদের জন্য। পরাধীন ভারতবর্ষে স্বাধীনতা আন্দোলনের ক্রান্তিকালের সময়টা ভারতীয়দের কাছে সুখের ছিল না।

দেশজুড়ে তখন চলছে ব্রিটিশদের নির্মল, নৃশংস অত্যাচার। স্বাধীনতা আন্দোলনকারী নিরীহ ভারতীয়দের ওপর পুলিশ-প্রশাসন নির্মমভাবে গুলি চালিয়ে হত্যা করছিল। আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সবাই ছিল সেই মৃতদের মধ্যে। চারিদিকে প্রতিবাদের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ঝড়ে পড়ছে। পাঞ্জাসাহেবের জীবিত মানুষদের অন্য শহরের জেলে পাঠানাে হচ্ছে। ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর মৃতপ্রায় কয়েদিদের তৃষ্ণার জল টুকুও দেওয়া হয়নি। এমনকি হুকুম হয়েছে।

তাদের ট্রেন যেন কোথাও না থামে। ব্রিটিশ শাসনের এই কঠোরতায় পাঞ্জাসেবের লােকজন উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তারা ঠিক করে খিদে তেষ্টায় কাতর কয়েদিদের ট্রেনটা, থামােনা হবে। ক্ষুধার্ত মানুষ অনাহারে থাকবে, শহরবাসী তা কিছুতেই হাত দেবে না। কেননা, এই পাঞ্জাসাবেই গুরুনানক তৃষ্ণার্তের তৃষ্ণা মিটিয়েছিলেন। সুতরাং দেশপ্রেমিকদের জল রুটির ব্যবস্থা করতে গিয়ে রেললাইনে দাঁড়িয়েছিলেন।

অসংখ্য মানুষ, কিন্তু ট্রেন থামেনি। মারা গিয়েছিলেন প্রচুর। মানুষ। গল্পকথক পুনরায় যখন মায়ের কাছে গুরু নানকের গল্প শুনেছিলেন তখন তাঁর চোখে জল এসে গিয়েছিল। এ জল অবশ্য তাদের জন্য যারা জীবনকে তুচ্ছ করে ট্রেন থামিয়ে দেশবাসীকে রুটি-জল পৌঁছে দিয়েছিল, যারা সাকা করে মহৎ আদর্শ ও ত্যাগের পরিচয় দিয়েছিল।



[su_posts posts_per_page=”8″ order=”desc”]