গাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকা উল্লেখ করো।

গাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকা উল্লেখ করো।

উত্তর : আরবি, ফারসি ও সংস্কৃত সাহিত্যে প্রভূত পাণ্ডিত্য থাকা সত্ত্বেও রাজা রামমােহন পাশ্চাত্য শিক্ষার একজন উৎসাহী সমর্থক ছিলেন। তিনি মনে করতেন যে, আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার উপর ভিত্তি করেই নব ভারত গড়ে উঠবে।

পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকা  

পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন : পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে রাজা রামমােহন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ ভূমিকা নেন। হিন্দু কলেজের প্রতিষ্ঠা (১৮১৭) ও পরিচালনার সঙ্গে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন বলে অনেকে মনে করেন। তিনি নিজ ব্যয়ে অ্যাংলাে হিন্দু স্কুল (১৮১৫) ও বেদান্ত কলেজ (১৮২৫) প্রতিষ্ঠা করেন। ডেভিড হেয়ারের শিক্ষা প্রসারের কাজে তিনিই ছিলেন মুখ্য সহায়ক। স্কটিশ মিশনারী আলেকজান্ডার ডাফ কলকাতায় জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠায় (১৮৩০) ব্রতী হলে রাজা রামমােহন তাঁর প্রধান পৃষ্ঠপােষকে পরিণত হন।

আমহার্স্ট-কে পত্র প্রেরণ : ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনে বরাদ্দকৃত সরকারি ১ লক্ষ টাকা প্রাচ্য শিক্ষা খাতে ব্যয়ের উদ্যোগ নেওয়া হলে পাশ্চাত্যপন্থী রাজা রামমােহন এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে বড়লাট লর্ড আমহার্স্টকে পত্র প্রেরণ করেন। ঐতিহাসিক এই পত্রে তিনি সংস্কৃত শিক্ষার অসারতা প্রমাণ করে ভারতে আধুনিক ও যুগপােযােগী পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের জোরালাে দাবি জানান। ভারতীয় নবজাগরণের ইতিহাসে এক মূল্যবান দলিল রাজা রামমােহন রায়ের এই ঐতিহাসিক পত্রটি।

মন্তব্য : প্রাচ্যের শাশ্বত চিন্তাধারার সঙ্গে পাশ্চাত্যের আধুনিক শিক্ষা ও যুক্তিবাদের সমন্বয় ঘটিয়ে রাজা রামমােহন এক নবভারত গঠনের স্বপ্ন দেখেন। যথার্থই তিনি ছিলেন ভারতীয় নবজাগরণের অগ্রদূত।


[su_posts template=”templates/list-loop.php” posts_per_page=”3″ tax_term=”1090″ order=”desc” orderby=”rand”]