গারাে পাহাড়ের নীচে যারা বাস করে তাদের জীবনযাত্রার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও

 আমার বাংলা সুভাষ মুখােপাধ্যায় 

গারাে পাহাড়ের নীচে যারা বাস করে তাদের জীবনযাত্রার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

  উ: সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের গারাে পাহাড়ের নীচে রচনাংহে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী গারাে-হাজং প্রভৃতি জনজাতির কথা জানা যায়। গারাে পাহাড়ের নীচে সুসং পরগণায় বাস করে হাজং- গারাে- কোচ-বানাই- ডালু- মার্গান প্রভৃতি নানা উপজাতির মানুষ।

এখানকার প্রথম বাসিন্দা হাজংরা ছিল চাষাবাদে খুব দক্ষ। তাই গারােরা এদের নাম দিয়েছিল হাজং অর্থাৎ চাষের পােকা। গারােদের ভাষা আলাদা। বুনাে জন্তুদের ভয়ে তারা মাচার ওপর ঘর বেঁধে পােষা হাঁস মুরগিদের নিয়ে মাচাতেই থাকে। সেখানেই রান্না, খাওয়া, ঘুমােনাে সব ব্যবস্থাই থাকে।

চাষের সময় প্রত্যেক জনজাতির মানুষ হাল বলদ নিয়ে চাষাবাদ করে। ধান কাটার সময় নারী পুরুষ সকলেই। কাস্তে হাতে মাঠে যায়। পিঠে আঁটিবাঁধা ধান নিয়ে ছােটো ছেলের দল খামারে এসে জোটে। কিন্তু পরিশ্রম করে উৎপাদিত ফসলের বেশিরভাগটাই জমিদারের পাইক বরকন্দাজরা এসে পাওনা গণ্ডার নামে আত্মসাৎ করে।

হাতি বেগার আইনের কারণে জমিদারের শখ মেটাতে, হাতি শিকারের সময় জঙ্গল ঘিরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হত গ্রামের অসহায় নিরীহ প্রজাদের। প্রজাবিদ্রোহের। ফলে সে আইন বাতিল হলেও তাদের দুর্দশা ঘােচেনি। গারােদের নিজস্ব ভাষা আছে। হাজং ডালুদের ভাষা বাংলা। হলেও তাদের উচ্চারণ একটু আলাদা।

এই জনজাতিদের নিজস্বতা ফুটে ওঠে তাদের ভাষা ব্যবহারে। অনেক বছর আগে, এক সময় গারাে পাহাড়ের নীচের বাসিন্দাদের গােলা ভরা ধান, মাঠ ভরা শস্য ছিল। তাদের খেয়েপরে বেঁচে থাকতে কোনাে অসুবিধাই হত না। কিন্তু জমিদারের নির্মম অত্যচারে এখন তা কল্পনাতীত।



[su_posts order=”desc”]