কিযাণ সভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর : ভূমিকা : চাষবাস যাদের পেশা অর্থাৎ কৃষিজীবী সম্প্রদায় কিাণ বা কৃষক নামে পরিচিত। ভারতের বেশিরভাগ মানুষ হল পেশায় কৃষক বা কৃষাণ। ভারতে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পর এই শ্রেণি প্রথম বিদ্রোহ করে। বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত এই শ্রেণিকে রাজনীতিতে যুক্ত করার পরিকল্পনা করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।।
কিষাণ সভা গঠন : অধ্যাপক এন. জি. রঙ্গের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কিযাণ সংগঠনের (১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে) লখনউ অধিবেশনে সর্বভারতীয় কিষাণসভা গঠিত হয়। এই সভার সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন স্বামী সহজানন্দ সরস্বতী অন্য জন হলেন এন. জি. রঙ্গ। এছাড়া অনেকেই এই কিষাণ সভার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
উদ্দেশ্য : কিষাণ সভার উদ্দেশ্য ছিল—জমিদার, মহাজন ও শাসক সরকারের অন্যায় অত্যাচার ও শােষণের হাত থেকে কৃষকদের স্বার্থরক্ষা করা এবং কৃষকদের জন্য অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন করা।
কিষাণ সভার দাবিসমূহ : ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের আগস্টে ‘সারা ভারত কিষাণ সভা’-র এক ইস্তাহারে দাবি করা হয়—
প্রথমত : বেগার প্রথার অবসান ঘটাতে হবে।
দ্বিতীয়ত : জমিদারি প্রথার উচ্ছেদ করতে হবে।
তৃতীয়ত : কৃষিঋণ মুকুব করতে হবে।
চতুর্থত : বনজ সম্পদের উপর কৃষকদের অধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে।
পঞ্চমত : পতিত ও খাস জমি কৃষকদের মধ্যে বণ্টন করতে হবে।
ষষ্ঠত : খাজনার হার ৫০% কমাতে হবে।
গুরুত্ব : সৰ্বৰ্ভারতীয় কিযাণ সভা গঠনের মধ্য দিয়ে কৃষকশ্রেণি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ শুর করে। দেশের মুক্তি সংগ্রামে ভারতীয় জনগণের বৃহত্তম অংশ শামিল হওয়ার সুযােগ পায়। ভারতের কৃষক আন্দোলনের ইতিহাস সর্বভারতীয় কিষাণ সভার প্রতিষ্ঠার একটি স্মরণীয় ঘটনা।
উপসংহার : সর্বভারতীয় কিষাণ সভা গঠনের ফলে কিষাণ আন্দোলনে নবপ্রান্তের সার ঘটে।