মৃত্যুঞ্জয়ের এই পরিবর্তন ও পরিণতির ইতিবৃত্ত সংক্ষেপে লেখাে | কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন

কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন এবং উত্তর {DTQ}

কে বাঁচায় কে বাঁচে (MCQ)
কে বাঁচায় কে বাঁচে (SAQ)
কে বাঁচায় কে বাঁচে  বড় প্রশ্ন উত্তর [DTQ]
Higher Secondary Bengali Exam Preparation

১৭। গাঁ থেকে এইছি। খেতে পাই নে বাবা। আমায় খেতে দাও।—মৃত্যুঞ্জয়ের এই পরিবর্তন ও পরিণতির ইতিবৃত্ত সংক্ষেপে লেখাে। এই প্রসঙো লেখকের বক্তব্য বিশ্লেষণ করাে। [৩+২]

উ: পরিবর্তন ও পরিণতি: মৃত্যুঞ্জয় উচ্চবিত্ত শ্রেণির মােটা মাহিনার অফিস চাকুরে মানুষ। শহুরে ফুটপাথের রূঢ় বাস্তবজীবনের থেকে দূরে নিরালা অঞ্চলের বাসিন্দা। খবরের কাগজ পড়ে, কিছু কিছু লােকমুখে শােনে দেশের ভয়াবহ আকাল, নিরন্ন মানুষের অসহায় মৃত্যু সম্পর্কে ভাসাভাসা তার ধারণা। এভাবেই দিন চলছিল মৃত্যুঞ্জয়ের। তার মাঝে একদিন অফিস আসার পথে ফুটপাথে অনাহারে মানুষ মরতে দেখে মনের দিক থেকে এমনই আহত হয় যে, সেই বেদনাবােধের ধাক্কায় অসুস্থতা বােধ করে বমি করে ফেলে। সেই থেকে নিজেকে অপরাধী মনে হয় তার এই কারণে যে, ফুটপাথে লােক মরছে অনাহারে, অথচ সে দিনে চারবেলা ভূরিভােজ করে খাচ্ছে। অনুতপ্ত মৃত্যুঞ্জয় ভাবে, এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কী ? দুর্ভিক্ষপীড়িত ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য সে কিছু করতে চায়। তার মাসের সমস্ত মাইনে রিলিফ ফান্ডে দান করে। একবেলা খায়, আর- একবেলার খাবার ক্ষুধার্তদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়। তাতেও শান্তি পায় না। রাতে ঘুম হয় না। তার সহকর্মী বন্ধু নিখিল লক্ষ করে, মৃত্যুঞ্জয়ের ভিতরটা যেন পুড়ছে। তার গােলগাল মুখখানা থমথমে। দিন দিন সে যেন কেমন হতে থাকে। অফিস আসে দেরি করে, কাজে ভুল করে, চুপ করে কী যেন ভাবে। একসময় অফিস থেকে বেরিয়ে যায়। বাড়িতেও তাকে দেখা যায় না। সে শহরের ফুটপাথে ঘুরে বেড়ায়। ডাস্টবিনের ধারে, গাছের তলায়, ফুটপাথে নিরন্ন ক্ষুধার্ত মানুষদের দেখে, তাদের সঙ্গে আলাপ করে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের লক্ষ করে। সে পরিষ্কার অনুভব করে, বুভুক্ষু মানুষগুলির ভাষা এক, বচনভঙ্গি এক। তাদের মিনমিনে গলায় অদৃষ্টের কথা, দুঃখের কাহিনি। অবশ্য তাদের মুখে নালিশ নেই, প্রতিবাদ নেই। কীভাবে তাদের এই নিরন্ন অবস্থা, তা তারা জানে না, জানতেও চায় না। তারা সবকিছু অদৃষ্ট বলে মেনে নিয়েছে। মৃত্যুঞ্জয় তাদের সর্বস্ব দিয়েও কিছু করতে না পারায় অসহায়তা ও হতাশার কারণে মুষড়ে পড়ে। একসময় নিরন্ন বুভুক্ষু মানুষদের মাঝে তার ঘােরাফেরার স্থান নির্দিষ্ট হয়ে যায়। নিখিলের যুক্তিতর্ক তার কাছে নিষ্ফল মনে হয়। তার গায়ের ধূলিমলিন সিল্কের পাঞ্জাবি গা থেকে অদৃশ্য হয়। তার পরনে দেখা যায় একটুকরাে হেঁড়া ন্যাকড়া। ছােটো একটা মগ হাতে আর দশজনের সঙ্গে ফুটপাথে থাকে। কাড়াকাড়ি, মারামারি করে লঙ্গরখানার খিচুড়ি খায়। আর তাদেরই মতাে করুণ গলায় বলে, ‘গাঁ থেকে এইছি। খেতে পাই নে বাবা। আমায় খেতে দাও । এই তার পরিবর্তন ও পরিণতির ইতিবৃত্ত।

লেখকের বক্তব্য: গল্পকার মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে যখন এই গল্প লেখেন, তিনি তখন মার্কসীয় সাম্যবাদী আদর্শে দীক্ষিত। উচ্চবিত্ত মৃত্যুঞ্জয়কে মানবিকবােধে উজ্জীবিত করে ব্যক্তি থেকে সমষ্টিতে নামিয়ে এনেছেন। ব্যক্তির চেয়ে সমষ্টির গুরুত্বকে প্রাধান্য দিয়েছেন। আসলে বুর্জোয়া শ্রেণিভুক্ত সমাজের প্যাটার্ন বদলানাের জন্য ব্যক্তির ও পরিবারের অবলােপ হয়ে সমষ্টির গুরুত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়া দরকার। মৃত্যুঞ্জয়ের গায়ে সিল্কের পাঞ্জাবিটি যেন উচ্চবিত্ত তথা বুর্জোয়া সমাজের প্রতীক। সেটা গা থেকে অদৃশ্য হয়ে বা বুর্জোয়ার খােলসটি খসে যেতে মৃত্যুঞ্জয় সর্বহারাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে তার ব্যক্তিসত্তার অবলােপের মাধ্যমে সমষ্টিগত সর্বহারায় পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া পরিণতি পেয়েছে। বিশেষ আদর্শে উজ্জীবিত চরিত্রভিত্তিক গল্পের এই যে শৈল্পিক রূপ ও মানবিক জীবনবােধের বাস্তব রূপায়ণ, তা সার্থক।


 ১। ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে!’ গল্পের উৎস নির্ণয় করো এবং গল্পটির সারাংশ লেখো। [1+4]  ‘Ans./উত্তর click here 

২। গল্পকার মানিক বন্দ্যেপাধ্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে!’ গল্প আলোচনা প্রসঙ্গে নামকরণ কতখানি যথাযথ ও সার্থক হয়েছে আলোচনা করো।  ‘Ans./উত্তর click here 

৩। ‘নইলে দর্শনের অনেক আগেই ঘটে যেত সন্দেহ নেই।’ –কার, কী দর্শনের কথা বলা হয়েছে? অনেক আগেই দর্শন ঘটে যাওয়া সম্ভব হয়নি কেন?  ‘Ans./উত্তর click here 

৪। তখন সে রীতিমতাে কাবু হয়ে পড়েছে।—“তখন’ বলতে কখন? রীতিমতাে কাবু হয়ে পড়ার কারণ কী? সে যে রীতিমতাে কাবু হয়েছে তার কী লক্ষণ দেখা গেল? [১+২+২]  Ans./উত্তর click here 

৫। কী ঘটনার ফলে মৃত্যুঞ্জয় শুন্যদৃষ্টিতে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে রইল-আলােচনা করাে। ওই প্রসঙ্গে ‘শূন্যদৃষ্টিতে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকার তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও। [৩+২]  ‘Ans./উত্তর click here 

৬। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা কে বাঁচায়, কে বাঁচে!’ গল্পেৱ নিখিল চরিত্রটি আলােচনা করাে। [৫] ‘Ans./উত্তর click here

৭। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা কে বাঁচায়, কে বাঁচে। গল্পের মৃত্যুঞ্জয় চরিত্রটি আলােচনা করাে। [৫] ‘Ans./উত্তর click here

৮। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে। গল্প অবলম্বনে মৃত্যুঞ্জয় ও নিখিল চরিত্রের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও। [৫]  Ans./উত্তর click here

৯। মৃত্যুঞ্জয়ৱ ৱকম দেখেই নিখিল অনুমান করতে পারল বড় একটা সমস্যার সঙ্গে তার সংঘর্ষ হয়েছে।—মৃত্যুঞ্জয়েৱ কী এমন দেখেছে যে, তা নিখিলেৱ অনুমানের কারণ হয়েছে? বড় একটা সমস্যা কী? সে সমস্যার সঙ্গে কীৱকম সঘাত হয়েছে বলে নিখিলের অনুমান? [২+১+২]  Ans./উত্তর click here

১০। নিখিলেৱ মনে হল, মৃত্যুঞ্জয়ৱ ভিতৱটা সে পৱিষ্কার দেখতে পাচ্ছে —এই পৱিষ্কার। দেখা প্রসঙ্গে নিখিল মৃত্যুঞ্জয়ের ধারণা সম্পর্কে যা ভেবেছে তা বিবৃত কৱা। নিখিলের ওই ধারণা যে ঠিক নয়, মৃত্যুঞ্জয়ের জবাবে কীভাবে তা প্রমাণিত হল লেখাে। [২+৩] Ans./উত্তর click here

১১। মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ ছল ছল কৱতে দেখে নিখিল চুপ করে থাকে।—মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ ছলছল করতে থাকে কেন? চুপ করে থাকা সত্ত্বেও নিখিল বিক্ষুদ্ধ চিত্ত কী ভাবতে লাগল লেখাে। (২+৩] Ans./উত্তর click here

১২। কদিন পরেই মাইনর তারিখ এল-মাইলের ব্যাপাৱাকে ঘিরে নিখিল ও মৃত্যুঞ্জয়ের বক্তব্য ও মনােভাব বিশ্লেষণ করা [২+৩] Ans./উত্তর click here

১৩। ‘ওটা পাশবিক স্বার্থপরতা। কে, কাকে ও কী প্রসঙ্গে এ কথা বলেছে? উধৃত বাক্যেৱ তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও। [১+১+৩] Ans./উত্তর click here

১৪।‘তাৱপৱ দিন দিন কেমন যেন হয়ে যেতে লাগল মৃত্যুঞ্জয়।—মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবর্তনের ছবিটি ফুটিয়ে তােলাে এবং তার লন্ধ বােধ ও অভিজ্ঞতার পরিচয় দাও। [৩+২] Ans./উত্তর click here

১৫। মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শােচনীয় মৃত্যুঞ্জয় কে? তার বাড়ির শােচনীয় অবস্থার কাৱণ আলােচনা প্রসঙ্গে শােচনীয় অবস্থাৱ ছবিটি তােমার ভাষায় আঁকো। (১+২+২]
অথবা, ‘মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শােচনীয়।—মৃত্যুঞ্জয় কে? তার বাড়ির অবস্থা শােচনীয় কেন? [১+8]  Ans./উত্তর click here

১৬।মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে!’ গল্প অবলম্বনে টুনুর মায়ের চরিত্র আলােচনা করাে। [৫] Ans./উত্তর click here