বঙ্গভঙ্গ বিরােধী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা আলােচনা করো – প্রশ্নমান-৪

Madhyamik History Notes

বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর : প্রশ্নমান-৪

১। বঙ্গভঙ্গ বিরােধী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা আলােচনা করো।

উ: ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত ঘােষণা করলে বাংলা তথা ভারতে এর বিরুদ্ধে যে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল সেই আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। লীলাবতী মিত্র, কুমুদিনী মিত্র, সরলাদেবী, নির্মলা সরকারসহ বাংলার নারীরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারা রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর আহ্বানে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর অরন্ধন ও উপবাস পালন করেছিলেন। মূলত তারা –

(ক) বিলাতি পণ্য যেমন শাড়ি, কাচের চুড়ি, লবণ, ঔষধ পত্র ব্যবহার বন্ধ করেছিলেন। দেশের তৈরি মােটা কাপড় তারা পরিধান করতেন। এই প্রসঙ্গে মুকুন্দদাসের এ ছ‘ফেলে দাও রেশমি চুড়ি কভু নারী আর পােরাে না’ কিংবা রজনীকান্ত সেনের – মায়ের দেওয়া মােটা কাপড় মাথায় তুলে নেরে ভাই’ অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল।

(খ) বাংলার নারী সমাজ স্বদেশে তৈরি পণ্যদ্রব্যের প্রচারে এগিয়ে এসেছিলেন এবং এ প্রসঙ্গে সরলা দেবী
চৌধুরানীর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছিল।

(গ) জাতীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে বহু ছাত্রী সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করে স্বদেশী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়।

(ঘ) বাংলার নারী সমাজ এই বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদসহ বিভিন্ন মিছিল ও পিকেটিং-এ অংশ নিয়েছিলেন।  মুর্শিদাবাদের গিরিজা সুন্দরী, ফরিদপুরের সৌদামিনী দেবী, ঢাকা-খুলনার লাবণ্যপ্রভা দত্ত, বরিশালের সরােজিনী দেবী ও মনােরমা বসু এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন।

সমালােচনা: তবে এই আন্দোলনে যে সমস্ত নেতৃত্ব বা নারী যুক্ত হয়েছিলেন তারা মূলতঃ সমাজের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছিলেন। নিম্নবিত্ত হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মহিলাদের এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়নি। তা হলেও ভারতের প্রথম জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে নারী সমাজের এই “স্বল্পতম ভূমিকা চোখে পড়ার মতাে।


[su_posts template=”templates/list-loop.php” posts_per_page=”10″ tax_term=”1090″ order=”desc”]