প্রতিরােধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

টীকা লেখাে : ফরাজি আন্দোলন | প্রতিরােধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ, নোট

 তৃতীয় অধ্যায় 

প্রতিরােধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর: প্রশ্নমান ৪

টীকা লেখাে : ফরাজি আন্দোলন।

উত্তর: এদেশে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক অসন্তোষের ফলে শুরু হয় ফরাজি আন্দোলন, যা ক্রমশ রাজনৈতিক রূপ পরিগ্রহ করে।

উদ্ভব: ফরাজি আন্দোলনের সূচনা করেন হাজি শরিয়ৎ উল্লাহ, পূর্ববঙ্গের ফরিদপুরে। ফিরাজি’শব্দের অর্থ হলাে—ইসলাম নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্তব্য’বা ইসলাম ধর্মের আদর্শে বিশ্বাস। হাজি শরিয়ৎ উল্লাহ ফরাজি’ নামে ধর্মীয় সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করে দরিদ্র মুসলমান কৃষক ও কারিগরদের ঐক্যবদ্ধ করেন।

লক্ষ্য: আন্দোলনের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল, ইংরেজ অধিকৃত ‘দার-উল-হারব’ (শত্রুর দেশ) ভারতবর্ষকে দার-উল-ইসলাম (ইসলামের দেশ)-এ পরিণত করা।

মহম্মদ মুসিন-এর ভূমিকা: শরিয়ত উল্লাহের মৃত্যুর পর আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন তাঁর পুত্র মহম্মদ মুসিন। যিনি দুদু মিঞা নামেই ইতিহাসে সমধিক পরিচিত। তিনি ছিলেন সুসংগঠক ও রাজনৈতিক চেতনার অধিকারী। তিনি সাংগঠনিক কাঠামাে গড়ে তুলে, অত্যাচারী জমিদার ও নীলকরদের বিরুদ্ধে  সংগ্রাম শুরু করেন। তিনি গ্রাম্য বিবাদে ইংরেজদের আদালতে না গিয়ে সালিশির ব্যবস্থা করেন এবং জমিদারদের করধার্য করার অধিকার অস্বীকার করেন।

বিস্তার: মহম্মদ মুসিন-এর নেতৃত্বে ফরাজি আন্দোলন ধীরে ধীরে ফরিদপুর, ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।

অবসান: ক্রমে আন্দোলনের ব্রিটিশ বিরােধী চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠলে সরকার মহম্মদ মুসিনকে কারারুদ্ধ করেন। ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ মুসিন-এর মৃত্যুর পর ফরাজি আন্দোলন ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং নােয়ামিঞার নেতৃত্বে তা শুধুমাত্র ধর্মীয় বিষয়েই সীমাবদ্ধ থাকে।

গুরুত্ব: ফরাজি আন্দোলনে ধর্মীয় ভাব যুক্ত থাকলেও এটি মূলত ছিল বাংলার একটি কৃষক বিদ্রোহ। জমিদার ও নীলকরদের বিরুদ্ধে নিপীড়িত কৃষকদের ঐক্যবদ্ধ করে ফরাজিরা তাদের মধ্যে এক সংগ্রামী চেতনার জাগরণ ঘটান।


Madhyamik History Notes

Madhyamik Suggestion

Madhyamik Result & Routine

 

RECENT POST

LATEST POST