সংঘবদ্ধতার গােড়ার কথা বিশ্লেষণ ও বৈশিষ্ট্য

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভারতমাতা চিত্র কীভাবে জাতীয়তাবাদী চেতনা বিস্তারে সহায়তা করেছিল

 চতুর্থ অধ্যায় 

সংঘবদ্ধতার গােড়ার কথা বিশ্লেষণ ও বৈশিষ্ট্য

বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর: প্রশ্নমান ৪

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ভারতমাতা’ চিত্র কীভাবে জাতীয়তাবাদী চেতনা বিস্তারে সহায়তা করেছিল? 

উত্তর: ভারতবাসীর স্বদেশচিন্তা কেবলমাত্র কাব্য, নাটক, উপন্যাস আর প্রবন্ধের রেখায় প্রকাশিত হয়নি; ভারতীয় চিত্রকলাতেও সেদিন লেগেছিল স্বাদেশিকতার ছোঁয়া। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ভারতমাতা’ চিত্রটি দেশপ্রেমের এরকমই এক মহাযজ্ঞ।

প্রেক্ষাপট : ১৯০৫ সালের স্বদেশি আন্দোলনের উন্মাদনার দিনে সারা বাংলাদেশ যখন মাতৃবন্দনায় উদ্বেল হয়ে উঠেছে সেই প্রেক্ষাপটে ১৯০৫ সালে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর অঙ্কন করলেন বঙ্গমাতা’র ছবি। পরে ভগিনি নিবেদিতা এর নাম দেন ভারতমাতা।

চিত্র বর্ণনা:  গৈরিক বস্ত্রে মণ্ডিতা এই মাতৃমূর্তি চতুর্ভূজা। তার চার হাতের এক-একটিতে ধরা আছে ধানের শিষ, শ্বেতবস্ত্র, পুস্তক এবং জপের মালা অর্থাৎ সন্তানের প্রতি মায়ের দান অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা ও দীক্ষা। 

জাতীয়তাবােধের জাগরণ: অবনীন্দ্রনাথের ‘ভারতমাতা’ নয়া জাতীয়তাবাদের প্রতীকে পরিণত হয়, দেশবাসী মাতৃমূর্তি পায়। স্বদেশি বাংলায় এই ছবি নিয়ে শােভাযাত্রা বের হতাে। এই চিত্রের মধ্য দিয়ে অভয় ও সমৃদ্ধিদানকারী মাতৃদেবীর রূপকে কল্পনা করা হয়েছে। ভারতমাতা এখানে একাধারে মানবী ও দেবীরূপে কল্পিত হয়েছেন। অবনীন্দ্রনাথের ‘ভারতমাতা’তপস্বীনি। তিনি কল্যাণময়ী ও করুণারুপিনী।

সমালােচনা: অবনীন্দ্রনাথের ‘ভারতমাতা’-কে ব্রাম্মসমাজের অনেকেই মূর্তিপূজার বাড়াবাড়ি বলে সমালােচনা করেছেন। মুসলিম সমাজেও ভারতমাতার হিন্দু ধর্মীয়রূপকে সমালােচনায় বিদ্ধ করা হয়েছে।

মন্তব্য: নানাবিধ সমালােচনা সত্ত্বেও পরিশেষে বলা যায় জাতীয়তাবােধের উজ্জীবনেও স্বাদেশিকতার প্রচারেঅবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভারতমাতা চিত্র নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় চিত্রকলার পুনর্জন্ম ঘটেছে তাঁরই হাতে। তিনি যথার্থই ‘নব্যবঙ্গীয় চিত্রকলার অগ্রদূত।


Madhyamik History Notes

Madhyamik Suggestion

Madhyamik Result & Routine

RECENT POST

LATEST POST